সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
আ ব্যাগফুল অফ্‌ অ্যাপ্‌ল্‌স্‌

বাবা খরগোশ সক্কাল সক্কাল বেরিয়েছে খাবারের খোঁজে। বাড়িতে তার গিন্নি, সাথে চারটে দামাল দস্যি ছেলে - ইয়ার্ড্‌, ফ্লাফি, বেল আর জাম্পার, আর এক রত্তি এক মেয়ে। এতগুলো পেটের খাবার যোগাড় করা কী চাট্টিখানি কাজ! এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে সে এসে হাজির হয় এক বুনো আপেলের গাছের কাছে। ওমা কী কান্ড! গাছ টা যে লাল লাল পাকা আপেলের ভারে একদম নুয়ে পড়েছে! গাছের নিচেও পড়ে আছে কত কত আপেল। বাবা খরগোশ তো দেখে বেজায় খুশি। আজ বাড়ির জন্য পেট ভরে খাবার নিয়ে যেতে পারবে। সবাই পেট পুরে খাবে।

এই না ভেবে, সবে বাবা খরগোশ তার বস্তায় মাটিতে পড়ে থাকা আপেল গুলো ভরতে শুরু করেছে, এমন সময়ে কোথা থেকে এসে হাজির এক হিংসুটে কাক। সে তো এসেই মহা চিৎকার-চ্যাঁচামেচি শুরু করে দিল। "কারো লজ্জা নেই, যে যেমন পারছে এসে সব আপেল নিয়ে চলে যাচ্ছে...!" বাবা খরগোশ তো শুনেই হাঁ। সে কাক কে বলল, " তুমি বিনা কারণে এমন হইচই করছো, এগুলো তো সব বুনো আপেল; এখানে সবার জন্য কত কত আপেল রয়েছে...ওদিকে বাড়িতে আমার ছানাগুলো খিদে পেটে নিয়ে বসে আছে..."

এই না শুনে দুষ্টু কাকটা খরগোশ কে ভয় দেখিয়ে বললো, "তোমার কী কোন বুদ্ধি নেই নাকি? তুমি বাড়িতে বাচ্চাদের ফেলে চলে এসেছ? শিগ্‌গির বাড়ি যাও, না হলে দেখবে কখন শিকারি এসে দুম -দাম গুলি ছুঁড়ে তোমার বাচ্চাদের নিয়ে চলে গেছে, না হলে নেকড়ে আসতে পারে..."

এরকম সব খারাপ কথা শুনে বাবা খরগোশ বেজায় রেগে-মেগে বস্তার মুখ বেঁধে বাড়ির পথে রওনা দিল। হিংসুটে কাক কি তাও তার পিছু ছাড়ে? এক বস্তা আপেল হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে সে পেছন পেছন বলতে বলতে চললো- " তোমার বাচ্চাগুলো এত খেলে পেট ফেটে মরবে!" এ'কথা শুনে কার না রাগ হয়? তাই বাবা খরগোশ ও কাককে সুযোগ বুঝে একটু পিটুনি দিয়ে দিল।

পথে তার দেখা হল,ভালুক খুড়ো, কাঠবেড়ালির বড়-মেজো-ছোট ছানা, সজারু ভাই, ভোঁদর দাদা, ভেড়া গিন্নীর সাথে। সবাইকে সে তার বস্তার থেকে আপেল বিলোতে বিলোতে চললো। তার বস্তায় এত এত আপেল, কয়েকটা করে দিলেই বা কী? সবাইকে দিয়ে-থুয়ে ভাল ভাল জিনিষ ভাগ করে নিলে তবেই না আনন্দ!

আ ব্যাগফুল অফ্‌ অ্যাপ্‌ল্‌স্‌

ওদিকে সেই হিংসুটে কাকটা করেছে কী, সে খরগোশকে ধাওয়া করেছে। আর খরগোশের এহেন কান্ড কারখানা দেখে ভাবছে- খরগোশটা তো বেজায় বোকা! যার বাড়িতে খাবার নেই, সে কীনা অন্য সবাইকে খাবার বিলোতে বিলোতে যাচ্ছে? কী বুদ্ধির বহর, আহা !

এত অবধি তো ঠিক ছিল, কিন্তু তারপরে সে যেটা করলো, সেটা খুবই খারাপ কাজ। সে খরগোশের পুরনো বস্তার পেছনে তালি মারা তাপ্পিটা ঠুকরে ঠুকরে খুলে নিল। বেচারা খরগোশের বস্তায় যে ক'টা আপেল ছিল, সেগুলোও সব ফাঁক দিয়ে গলে পড়ে গেল।

এদিকে সন্ধ্যে ঘনিয়ে এসেছে, আকাশ কালো করে মেঘ গরজাচ্ছে, বৃষ্টি পড়তে শুরু হয়েছে। এবার তাহলে বাবা খরগোশ কী করবে? বাড়িতে যে তার গিন্নী, তারছে দামাল দস্যি ছেলেরা আর এক রত্তি এক মেয়ে- সবাই খাবারের অপেক্ষায় বসে রয়েছে? আজ রাতে কি তাহলে তারা সবাই উপোস করে থাকবে? আর হিংসুটে কাকই কি তাহলে ঠিক প্রমাণিত হবে? উদারতার বদলে হিংসুটেপনার জয় হবে?

এর উত্তর জানতে হলে, এই ছুটিতে , কোন একদিন সময় করে দেখে ফেল মাত্র মিনিট কুড়ির রাশিয়ান অ্যানিমেশন ছবি ' আ ব্যাগফুল অফ অ্যাপ্‌ল্‌স্‌'। ক্লাসিক্যাল অ্যানিমেশন পদ্ধতিতে ছবিটি নির্মাণ হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, নির্মাণ করেছিল সেই সময়ের বিশ্ববিখ্যাত সোভিয়েত অ্যানিমেশন স্টুডিও সোয়ুজমাল্টফিল্ম।

গল্পটি লিখেছিলেন ভ্লাদিমির সুতিয়েভ আর পুরো ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন ভিতোল্‌দ্‌ বোরজিলভস্কি।ফিল্মটি বিনামূল্যেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ইউটিউবে। আর যেহেতু মোটে কুড়ি মিনিট, তাই দিনের যেকোন সময়েই টুক করে বাড়ির সবাই মিলে বসে দেখে ফেলতে পারা যায় এই ছোট্ট অ্যানিমেটেড ছবিটা।

ছবির ইউটিউব লিঙ্ক এখানে দিলামঃ

মহাশ্বেতা রায় চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ওয়েব ডিজাইন, ফরমায়েশি লেখালিখি এবং অনুবাদ করা পেশা । একদা রূপনারায়ণপুর, এই মূহুর্তে কলকাতার বাসিন্দা মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী ওয়েব পত্রিকার সম্পাদনা এবং বিভিন্ন বিভাগে লেখালিখি ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের দেখভাল এবং অলংকরণের কাজ করেন। মূলতঃ ইচ্ছামতীর পাতায় ছোটদের জন্য লিখলেও, মাঝেমধ্যে বড়দের জন্যেও লেখার চেষ্টা করেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা