সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
মাশা আর ভালুক

জঙ্গলের ধার দিয়ে গেছে যে ফিনফিনে রেল লাইন, সেই রেল লাইনের ধারে একটা ছোট্ট কাঠের বাড়িতে থাকে মাশা নামের এক তিন বছরের পুঁচকে মেয়ে। মাশার বাড়িতে থাকে এক ছাগল, এক শুয়োর, আর এক ছোট্ট কুকুর। তিন বছরের মাশা বেজায় দস্যি, মাঝেমধ্যে ঘ্যানঘেনে আর তার সারাদিন খালি খেলা চাই। কিন্তু সারাদিন তার সাথে ছুটে ছুটে খেলবে কে? তাই ছাগল, শুয়োর আর ছোট্ট কুকুর মাশাকে ঘর থেকে বেরোতে দেখলেই সোজা লুকায় গাছের আড়ালে কিংবা মুর্গির খোঁয়াড়ে। এহেন মজাদার মেয়ে মাশা একদিন এক প্রজাপতির পিছু পিছু জঙ্গলের মধ্যে এসে সোজা হাজির হল এক ভালুকের বাড়িতে। ভালুক বড়ই শান্তিপ্রিয় এবং সংসারি। সে মৌমাছি পোষে আর ঘরদোর সমসময়ে পরিষ্কার রাখে। আর রোদে পিঠ দিয়ে সামোভার থেকে চা ঢেলে খায়। মাশা যখন ভালুকের বাড়িতে গিয়ে ঢুকল, তখন ভালুকভায়া গেছে মাছ ধরতে। এদিকে ফাঁকা বাড়ি পেয়ে মাশা তো সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে, নামিয়ে ফেলে একাকার কান্ড করে ফেলেছে। মৌমাছিদের বাক্স উল্টে ফেলে দিয়েছে, বাগানের বেড়া ভেঙে ফেলেছে। ভালুক তো বাড়ি ফিরে হাঁ। দেখে তার খাটের ওপর একরত্তি মাশা লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে এক কাণ্ড করছে।

মাশার হাত থেকে নিস্তার পেতে ভালুক তাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু মাশা তার পিছু ছাড়েই না। শেষে ভালুক রেগে গিয়ে মাশাকে জঙ্গলে ছেড়ে চলে আসে। কিন্তু তার তো আসলে মনটা বেজায় নরম। একলা বনে রাতের বেলা ছোট্ট মাশার যদি কোন বিপদ হয়, যদি সে ভয় পায়- এইসব ভেবে ভালুক তাকে খুঁজতে বেরোয়। তারপরে কী হল, সেটা জানতে হলে দেখে নাও ' মাশা অ্যাণ্ড দ্য বিয়ার - হাও দে মেট' - মাশার সাথে ভালুকের বন্ধুত্বের শুরুর গল্প, মাত্র মিনিট সাতেকের এই এপিসোডে, ইউটিউব থেকে।

২০০৯ সালে রাশিয়ান অ্যানিমেটেড টেলিভিশন সিরিজ 'মাশা অ্যাণ্ড দ্য বিয়ার 'এর প্রথম আবির্ভাব। এই গল্পগুলির সূত্র রাশিয়ায় বহু প্রচলিত একই নামের এক লোককথা। মূল রাশিয়ান থেকে এই সিরিজটি অন্তত ২৫টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে, আর বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে দেখানো হয়েছে। 'মাশা অ্যান্ড দ্য বিয়ার'-এর বেশিরভাগ ইংরেজি এপিসোডগুলো ইউটিউবে বিনামূল্যে দেখতে পাওয়া যায়।

মাশার গল্পগুলোতে শুধুই কিন্তু ভালুক আর মাশার ছাগল, কুকুর আর শুয়োর নেই। গল্পগুলি ক্রমশঃ জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে মাশার গল্পে এসেছে হরেক নতুন চরিত্র। আছে ভালুকের ভাইপো প্যান্ডা, এক জোড়া নেকড়ে, আরো দুই ভালুক, পেঙ্গুইন, সজারু, কাঠবেড়ালি। এদের সবার সাথে প্রতি এপিসোডে মাশা ঘটায় নানা কান্ড; তার দস্যিপনা যাতে তাকে বিপদে না ফেলে, তার জন্য সর্বদা তার খেয়াল রাখে ভালুক। আর বেশিরভাগ সময়েই মাশার যতরাজ্যের কান্ডকারখানার জেরে হরেক ঝামেলা পোয়াতে হয় ভালুককে।

আজকের দিনে , যখন আমাদের খুব বেশি করে প্রয়োজন আমাদের আশেপাশের প্রাণীজগত এবং উদ্ভিদজগতের খেয়াল রাখা, তখন ছোট্ট মাশা আর তার বন্ধুরা আমাদের শেখাতে পারে, কেমন করে আমরা একে অপরের খেয়াল রেখে, যত্ন করে, ভালবেসে, বন্ধু হয়ে একসাথে থাকতে পারি। এই সুন্দর অ্যানিমেটেড সিরিজটি শুধুই বাড়ির একদম ছোট্ট ছোট্ট ভাইবোনেদের আনন্দ দেবে না, বড়রাও সাথে বসে পড়ে দেখে ফেলতে পারেন যেকোন সময়ে। ২০১৬ এর ডিসেম্বরের শুরু অবধি 'মাশা অ্যাণ্ড দ্য বিয়ার'-এর মোট ৬০টি এপিসোড তৈরি হয়েছে। মাশা আর তার বন্ধুবান্ধবদের সম্পর্কে বেশি বেশি খোঁজখবর পেতে যদি চাও, তাহলে চলে যেতে পার তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে।

ছবিঃ মাশাবিয়ার ওয়েবসাইট

মহাশ্বেতা রায় চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন। ওয়েব ডিজাইন, ফরমায়েশি লেখালিখি এবং অনুবাদ করা পেশা । একদা রূপনারায়ণপুর, এই মূহুর্তে কলকাতার বাসিন্দা মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী ওয়েব পত্রিকার সম্পাদনা এবং বিভিন্ন বিভাগে লেখালিখি ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের দেখভাল এবং অলংকরণের কাজ করেন। মূলতঃ ইচ্ছামতীর পাতায় ছোটদের জন্য লিখলেও, মাঝেমধ্যে বড়দের জন্যেও লেখার চেষ্টা করেন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা