সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ
সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট

পরিবেশ দূষণ ও গ্রীনহাউস এফেক্ট কমাতে চাই ফসিল জ্বালানির বিকল্প শক্তির উৎস। এর আগে ইচ্ছামতীতেই এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই মুহূর্তে , বিকল্প শক্তির উৎসগুলির মধ্যে সৌরশক্তি সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। একটু বিশদে বলা যাক।

পৃথিবীতে সব শক্তির উৎসই সরাসরি বা ঘুরেফিরে, সূর্য। জ্বালানিতে জমা থাকে সৌরশক্তি, তবে তা তৈরি হতে প্রায়ই অনেক হাজার বছর লেগে যায়। আবার সৌরশক্তি থেকে হয় ঝড়-বাতাস, জোয়ার-ভাঁটা, যা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। সরাসরি সৌরশক্তি পৃথিবীতে আসে শূন্যের মধ্য দিয়ে বিকিরিত তাপ ও আলোকশক্তির মাধ্যমে। এই বিপুল পরিমাণ শক্তির অল্পটাই আমরা কাজে লাগাতে পারি। তাই ইদানীং সরাসরি সৌরশক্তি ব্যবহারের দিকে পৃথিবীর নজর যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভবিষ্যতে শুধু এভাবেই পাওয়া যেতে পারে পৃথিবীর চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি শক্তি আর ফসিল জ্বালানি, জল-বাতাস ও পরমাণুর ফিশন থেকে মোট যা পাওয়া যাবে, তারও কয়েকগুণ বেশি শক্তি। কী আমেরিকা, কী ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান তাই সৌরশক্তির বিকাশকে ভবিষ্যতে শক্তির চাহিদা মেটাবার মূলমন্ত্র করেছেন।

সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ
সৌরশক্তি একত্রিত করার জন্য ডিশ অ্যাণ্টেনার মত প্রতিফলক

সৌরশক্তির সরাসরি ব্যবহার তাপশক্তি না আলোকশক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে, এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সূর্যের তাপশক্তিকে কাজের কাজে লাগাতে হলে অর্থাৎ তাপমাত্রা যথেষ্ট বাড়াতে হলে অনেকটা সৌররশ্মিকে প্রথমে একত্রিত করা দরকার। সেই কাজ করা যায় ডিশ অ্যানটেনার মতো প্যারাবোলা বা অধিবৃত্ত আকৃতির প্রতিফলকের সাহায্যে অথবা ম্যাগনিফাইং গ্লাসের আকৃতির, কিন্তু অনেক বড়ো কনভেক্স বা উত্তল লেন্সের সাহায্যে। এই তাপ থেকে সরাসরি পদার্থকে গরম করা হয় সোলার কুকার, সোলার ওয়াটার হিটার প্রভৃতিতে। প্রতিফলক বা লেন্সের সাহায্যে একত্রিত সূর্যরশ্মির তাপের পরিমাণও অপর্যাপ্ত নয়। সেটুকু যথাসাধ্য আটকে রাখতে কুকারে 'গ্রীনহাউস এফেক্ট' ব্যবহার করা হয়। কুকারটা একটা খালি বাক্সের মতো। একত্রিত সূর্যরশ্মি যেখানে ফেলা হয়, সেখানে যে খাবার রান্না হবে সেটাকে রাখতে হবে। তারপর ওপরে একটা কাঁচের ডালা লাগিয়ে দিলেই বাক্সের ভেতরে ঢুকে পড়া বিকিরিত তাপ গ্রীনহাউস এফেক্টে আটকে থাকবে। বাক্সের ভেতরের দেওয়ালের রং কালো, তাই তা বিকিরিত তাপ প্রতিফলিত না করে শুষে নেয়। সাধারণ সোলার কুকারে খাবার খুব ঢিমে আঁচে রান্না হয়। তাড়াতাড়ি রান্নার জন্য তরকারিপাতি ছোটো করে কেটে দিতে হতে পারে। সোলার কুকার বয়ে নিয়ে রোদে রাখা যেতে পারে।

সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ
সোলার হীটার কালেক্টর

কিন্তু সোলার ওয়াটার হিটার বড়, তাই প্রায়ই স্থায়ীভাবে ছাদে বসানো থাকে। এতে থাকে সৌরতাপ ধরার জন্য 'কালেকটর' আর যে জল গরম হবে তার ট্যাঙ্ক। 'কালেকটর'-এর নানা গড়ন। সাধারণত এটি সূর্যের দিকে হেলিয়ে রাখা একটা বড় ধাতব প্লেট। এটা রোদে গরম হয়। এর লাগোয়া সার সার জলের নল সেই তাপ জলের ট্যাঙ্কে বয়ে নিয়ে যায়। গ্রীনহাউস এফেক্টে তাপ ধরে রাখতে কখনও প্লেটটি থাকে একটি বাক্সে কাঁচের ঢাকনার নিচে। নয়তো জলের ধাতব নলগুলি প্রায় বায়ুশূন্য, তাপ সইতে পারে এমন কাঁচের টিউবের মধ্যে রাখা হয়। বিকিরিত তাপ শোষণের জন্য জলের নলের রং থাকে কালো। সিলিন্ডার আকৃতির নইলে চৌকো জলের ট্যাঙ্কগুলি কালেকটরের চেয়ে উঁচুতে বসালে হালকা হবার জন্য গরম জল ট্যাঙ্কের ঠাণ্ডা জলকে ঠেলে ট্যাঙ্কে ঢোকে, ফলে ট্যাঙ্কের ঠাণ্ডা জল চলে আসে কালেকটরের নলে। সেগুলো আবার গরম হয়ে ওপরে উঠে যায়। এভাবে 'পরিচলন' পদ্ধতিতে পুরো ট্যাঙ্কের জল গরম হয়। সোলার হিটার ছোটো বাড়ি বা বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে বসানো যায়। আবার ঠাণ্ডার দেশে সুইমিং পুলের জল গরম করার কাজেও একে ব্যবহার করা যায়। সেই অনুযায়ী যন্ত্রের মাপ ছোটোবড়ো হয়। যন্ত্র বড়ো হলে অনেক সময় শুধু পরিচলন স্রোতের ওপর নির্ভর না করে পাম্পের সাহায্যে কালেকটর ও ট্যাঙ্কের মধ্যে জলপ্রবাহ চালু রাখা হয়। কখনও সূর্যরশ্মি একত্রিত করতে বড় প্যারাবোলা আকৃতির প্রতিফলক ব্যবহার করা হয়।

সরাসরি রোদের শক্তি কাজে লাগানোর এগুলো দুটি প্রধান দৃষ্টান্ত। এছাড়াও আরও নানা প্রয়োগ সম্ভব।

সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ
মহাবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন

তবে এই যুগ বিদ্যুতের যুগ। তাই শক্তির চাহিদা মেটানো মানে মূলত বিদ্যুৎ তৈরি করা। সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ তৈরির মূল উপাদান হচ্ছে সোলার সেল, যা আদতে 'ফোটোভোল্টায়িক' বা 'ফোটো' সেল। কথাটার অর্থ, যে সেল বা ব্যাটারি আলোর থেকে বিদ্যুৎ সৃষ্টি করে। আলোর থেকে বিদ্যুৎ সৃষ্টির প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা উনবিংশ শতাব্দীতেই শুরু। কিন্তু ১৯০৫ সালে মহাবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন প্রথম 'ফোটন' বা আলোকশক্তিকণার কল্পনার সাহায্যে ফোটোইলেকট্রিসিটি তত্ত্বকে এক শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করালেন। বিশেষ কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকোয়েন্সির ফোটন কতগুলো বিশেষ পদার্থের ওপর পড়লে তার থেকে বিদ্যুৎকণিকা ইলেকট্রন মুক্ত হতে পারে। এই ইলেকট্রনের স্রোতকে একটি বৈদ্যুতিক বর্তনী বা সার্কিটে প্রবাহিত করানো হলে আলোকশক্তি থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন হয়। এটাই হচ্ছে 'ফোটোইলেকট্রিসিটি'। আর এই বিদ্যুৎ তৈরির সেল হচ্ছে 'ফোটোভোল্টায়িক সেল' বা 'ফোটোসেল'। এই তত্ত্বের জন্য আইনস্টাইন ১৯২১ সালে নোবেল পুরস্কার পান। মজা এই যে তিনি বেশি বিখ্যাত তাঁর আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের জন্য, যা পরে পরমাণু শক্তি আবিস্কারের পথ প্রশস্ত করে সভ্যতার মানচিত্র বদলে দিয়েছে। কিন্তু তিনি তার জন্য নোবেল পাননি, কারণ সে তত্ত্ব তখন বেশি কেউ বুঝতেই পারেননি!

এই সেল আধুনিক প্রযুক্তিতে বিপ্লব এনেছে। তোমরা দেখে থাকবে এয়ারপোর্ট, মল বা বড় বাড়িতে 'স্বয়ংক্রিয়' দরজা কেউ কাছে এলে খুলে যায়। এটা সম্ভব ঐ ফোটোসেল বা তার আধুনিক অবতারদের সাহায্যে। ঐ সেলের সারি দরজার আশেপাশে লাগানো থাকে। কেউ কাছে এলে সেলের ওপর আলো পড়া বাধা পায়। তাতে সার্কিটে বিদ্যুতের যে ফারাক হয়, একটা ইলেকট্রিক রিলে সেটা ধরে ফেলে দরজা খুলে দেয়। একইভাবে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় লিফটে কেউ দুই দরজার মধ্যে এলে দরজা বন্ধ হতে হতেও খুলে যায়। 'বার্গলার অ্যালার্ম'-এও এই পদ্ধতিতে একসারি ফোটোসেলের ওপর বাইরে থেকে অদৃশ্য একগুচ্ছ আলোকরশ্মি ফেলা হয়। চোর কাছাকাছি এলে ঐ রশ্মি বাধা পেয়ে ফোটোসেলে তৈরি বিদ্যুৎ ব্যাহত হয়, একটা রিলে সেটা ধরে অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়। আগেকার দিনে ফিল্মের দৃশ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নয়, সেলুলয়েডের ওপর খোদাই হতো। দৃশ্যের সঙ্গে শব্দ মেলানোর জন্য 'সাউন্ড ট্র্যাক' ফিল্মের পাশে সাদাকালো ছোপের 'কোড'-এ খোদাই করে রাখা হতো। কিন্তু শব্দের ঐ 'ছবি'র থেকে আবার শব্দ কীভাবে তৈরি হবে? এখানেও সেই ফোটোসেল। 'সাদাকালো' কোডগুলির মধ্য দিয়ে আলো ফেলা হলে অন্যদিকে ফোটোসেলের সারি ঐ ছোপগুলি অনুযায়ী কমবেশি আলো পাবে, ফলে সাউন্ড ট্র্যাকের 'দৃশ্য' বিদ্যুতে পরিণত হবে। ঐ বিদ্যুৎ একটি স্পীকারে পাঠালে সেখানে সেই অনুযায়ী শব্দ তৈরি হবে।

সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ

ওপরে ফোটোসেলের যে প্রয়োগগুলি কথা বলা হল, তাতে এই সেলের সামান্য বৈদ্যুতিক শক্তি লিফট মোটর প্রভৃতির অনেক বেশি বৈদ্যুতিক শক্তি নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এই ফোটোসেলে উৎপন্ন শক্তিকেই যখন কাজে লাগানো হয়, তখন তাকে বলে সোলার সেল। একটি সোলার সেল থেকে সামান্য বিদ্যুৎশক্তিই পাওয়া যায়, তাতে ভোল্টেজও সামান্যই হয়। উপযুক্ত পরিমাণে বিদ্যুৎশক্তি পেতে তাই অজস্র সোলার সেলের সারি বা সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়। এই সোলার প্যানেলের বাস্তব ব্যবহার প্রথম শুরু মোটামুটি ১৯৫০-এর দশক থেকে, কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য। পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই উপগ্রহগুলিকে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় শক্তি একমাত্র পারমাণবিক জ্বালানী বা সৌরশক্তি থেকে আসা সম্ভব। বিবর্তনের সাথে সাথে সোলার সেলের ব্যবহার আকাশ থেকে পৃথিবীতেও নেমে আসে। গবেষণার ফলে এই সেল দিনে দিনে সস্তাও হচ্ছে। তবু এখনও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেশি, তাই বিভিন্ন দেশে সরকার ভর্তুকি দিয়ে এর উপযোগ জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছেন, যাতে আগামী দিনে গবেষণা আরও উৎসাহ পায় ও খরচ আরও কমে। এযুগের ইলেকট্রনিক বিপ্লবের মূলে যে 'সিলিকন', তাই দিয়েই অধিকাংশ সোলার সেল তৈরি করা হয়। অন্য কিছু ধাতুও ব্যবহার হয়, তবে সেগুলো অপেক্ষাকৃত দামি বা দুস্প্রাপ্য।

কালেকটরের সাহায্যে সৌরতাপ ধরে তার সাহায্যেও বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়। এভাবে জল গরম করে তার শক্তি বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎ সৃষ্টির প্রক্রিয়ার সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয়।

সৌরশক্তি ও তার প্রয়োগ
সৌরশক্তি চালিত টর্চ

বেশি খরচ ছাড়াও সৌরশক্তির কিছু ঝামেলা আছে। প্রথমতঃ, রোদ শুধু দিনে থাকে। বর্ষাকালেও রোদ থাকে না। তাই একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কখনও সৌরবিদ্যুতের সাথে অন্যান্য প্রচলিত পদ্ধতিতে তৈরি বিদ্যুৎ একই গ্রিডে দিয়ে তার থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়। এতে ফসিল জ্বালানি ইত্যাদির ব্যবহার বন্ধ না হলেও কমে। আর একটা উপায় যখন সূর্যালোক থাকে, তখন বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে বড় বড় ব্যাটারি চার্জ করে রাখা। সেই ব্যাটারি পরে বিদ্যুৎ দেবে। সোলার সেল বা ব্যাটারি থেকে 'ডি-সি' পাওয়া যায়। তাকে এ-সি করা হয় ইনভার্টারের সাহায্যে। সৌরবিদ্যুৎ বেশি পরিমাণে তৈরি করা হলে তার থেকে এসি, টিভি ও বাড়ির অন্যান্য যন্ত্র চালানো সম্ভব। আবার সোলার সেলের সাথে সেলফোনের মতো রিচার্জেবল ব্যাটারির 'ব্যাক আপ' জুড়ে সোলার টর্চ, সোলার ক্যালকুলেটর প্রভৃতি নানা ছোটোখাটো ব্যবহারের জিনিসও তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি 'ট্যাব', স্মার্টফোনও এভাবে মূলত সৌরশক্তিতে চালানো সম্ভব। কম শক্তিব্যয়ের জন্য টর্চে এল-ই-ডির আলো ও ক্যালকুলেটর, ট্যাব বা স্মার্টফোনে যথারীতি এল-সি-ডি ডিসপ্লে ব্যবহার হয়।

আর এক সমস্যা, সূর্যের অবস্থান আকাশে স্থির নয়। তাই বেশি শক্তি পেতে হলে সোলার প্যানেল বা কালেকটরকে অনবরত ঘুরিয়ে সূর্যের দিকে রাখা দরকার। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যায় কোনও ছোট্ট মোটরের সাহায্যে, যার ইলেকট্রনিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্যানেলকে অনবরত সর্বাধিক আলোকরশ্মির দিকে ঘুরিয়ে দেবে। আবার ফ্রেসনেল লেন্স ও অন্যান্য নানা কৌশলী আলোকীয় ব্যবস্থার সাহায্যে আকাশের অনেকটা এলাকার রশ্মি একটা জায়গায় এনে ফেলার ব্যবস্থা করেও এই সমস্যার অনেকটা সমাধান সম্ভব।

সৌরশক্তির আর এক অসুবিধা, সোলার প্যানেল বিস্তর জায়গা নেয়। ভারতের মতো জমির ঘাটতির দেশে এ এক বড় সমস্যা। কিন্তু ছাদে বা সেচখালের ওপরে প্যানেল বসিয়ে ও অন্য অনেক কৌশলের সাহায্যে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব।

এই মুহূর্তে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে সৌরবিদ্যুৎ ২০-৩০ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করছে। ভারতের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এই পরিমাণকে ছাড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব। সৌরশক্তির বিকাশ বর্তমানে ছোটোবড়ো নানা সমস্যার জালে জড়িয়ে থাকলেও এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ফসিল জ্বালানি, পারমাণবিক জ্বালানি, এমনকি নদীর জলও অতিব্যবহারের ফলে ফুরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু সৌরশক্তি অফুরন্ত, আগামী কয়েক শতাব্দীতেও মানুষ এর পর্যাপ্ত সদ্ব্যবহার করে উঠতে পারবে না। অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর শক্তি মানচিত্রে সৌরশক্তিকে পেছনে ফেলার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী কাউকে দেখা যাচ্ছে না। অন্তত যত দিন না বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 'কোল্ড ফিউশন' অর্থাৎ কম তাপমাত্রায় পরমাণুর 'ফিউশন' বা সংযোজন প্রক্রিয়া আবিস্কার করতে পারে।


রেখাচিত্র নির্মাণঃ মহাশ্বেতা রায়
ছবিঃ বিভিন্ন ওয়েবসাইট

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনীয়ার ও মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী অনিরুদ্ধ সেন কলকাতা-মুম্বইয়ের বিভিন্ন সাময়িকপত্র ও ওয়েব ম্যাগাজিনের নিয়মিত লেখক। তাঁর লেখা ও অনুবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, এবং সংকলিত বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা