সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
খাদ্য শৃঙ্খল

আমরা যে দিনরাত এত কাজকর্ম করি, তা করতে পারতাম না যদি না আমাদের শরীরে শক্তি থাকত। কাজ করার এই শক্তি পাই কোত্থেকে জান নিশ্চয়ই। খাদ্য থেকে। খাওয়াদাওয়া না করলে কিছু করতে পারবে? একেবারেই না। সুতরাং আমরা প্রয়োজনমত যা খাই, সেটাই আমাদের কাজ করার শক্তি যোগায়। খাবারের মধ্যে শক্তি কে যোগায় বলতে পার ? সূর্য। সূর্যই যে সকল শক্তির উৎস, সে-ই ত সব যোগায়!

সূর্য গাছপালার মাধ্যমে আমাদের জন্য খাবার তৈরী করে! আমরা সেই খাদ্য খেয়েই জীবন ধারন করি। এই, ধর, ডাল-ভাত, শাক-পাতা, ফল-মূল, এমনই নানাজাতীয় খাবার যা আমরা দৈনিক খাই, সব কিছুর যোগানদার হল গাছপালা আর পেছনে রয়েছে সূর্যের দাদাগিরি।

তাহলে আমরা যে মাছ- মাংস-ডিম খাই, তার কি ? সে সব কি আর গাছপালা তৈরী করে! না, তা করে না বটে, তবে যে যে প্রানীদের থেকে এসব পাই, তারা সবাই কিন্তু গাছপালা বা সূর্যের সাহায্যে তৈরী খাবার খেয়েই বাঁচে। তাহলে দেখ, পরোক্ষে সেই সূর্যই ত এই সব আমিষ খাদ্য তৈরীতে দায়ী, নাকি!

এসব কথা শুনে সব গোলমাল লাগছে ? সব গুবলেট হয়ে গেল ?

দাঁড়াও বুঝিয়ে বলি।

গাছ যে ভাবে খাবার তৈরী করে আমরা তা পারি না। গাছের খাবার তৈরী হয় 'সালোক-সংশ্লেষ' বা Photosynthesis পদ্ধতিতে। কিভাবে,সেটা দু'চার কথায় সেরে দিই, যদিও পুরো ব্যাপারটা বেশ জটিল। তবে যেহেতু জগতে একমাত্র গাছেরই খাদ্য তৈরী করার ক্ষমতা আছে আর সূর্যের কেরামতিটাও জানা দরকার, তাই জটিল হলেও তাদের কথা একটু জানতেই হচ্ছে।

এটা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে, কোন গাছ পুঁতলে, বিশেষ করে ছোট গাছ, প্রতিদিন নিয়ম করে জল দিতে হয় ? এর কারণ এরা মাটি থেকে জল শোষন করে, যা দিয়ে খাবার তৈরী হয়। তাই জল না দিলে খাবার তৈরী হবে কি করে ? খাবার তৈরী না হলে, খাওয়াও হয় না। আর খেতে না পেলে কেউ বাঁচে ? তাই না খেতে পেয়ে মরে যায়। গাছ বড় হয়ে গেলে অবশ্য অনেকদুর পর্যন্ত শেকড় চালিয়ে প্রয়োজনীয় জল পেতে পারে, তখন আর জল দিতে হয় না।

তবে শুধু জল আর দিয়ে ত আর খাবার বানানো যায় না, অন্য কিছুও লাগে। এতে আরও যা লাগে তা হল কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস। এটা গাছেরা পায় বাতাস থেকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় সূর্যের আলো, যা তৈরী খাবারে শক্তি যোগায়। কিভাবে তা জানতে পারবে বড় হয়ে উঁচু শ্রেনীতে পড়ার সময়, কারণ আগেই বলেছি ব্যাপারটা বেশ জটিল। এখন বললে কিছুই বুঝতে পারবে না!

যে খাবার তৈরী হয় তার নাম 'শর্করা' জাতীয় খাদ্য। চিনি বা গ্লুকোজ এই ধরনের খাদ্য।

খাদ্য শৃঙ্খল

গাছেদের রান্নাঘর কোনটা জান ? তাদের সবুজ পাতা। গাছের পাতা সবুজ হয় কেন তা জান না বোধ হয়। পাতায় সবুজ রং-এর একরকমের আনুবীক্ষণিক কণা 'ক্লোরোপ্লাস্ট' থাকে গাদাগাদা। এরা থাকার জন্যই পাতা সবুজ হয়। এই সব কণার মধ্যে থাকে ক্লোরোফিল নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ। আসলে এইটি সবুজ বলে কণা গুলো আর পাতাও সবুজ দেখায়।

জল, কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর সূর্যের আলোর মধ্যে মিলমিশ ঘটায় ঐ সবুজ রং-এর ক্লোরোফিল। এর ফলে তৈরী হয় শর্করাজাতীয় খাবার। নিজেরা খাবার পর বেঁচে যাওয়া খাবার গাছ সঞ্চয় করে রাখে কান্ডে, পাতায়, ফলে-ফুলে, আরও নানা ভাবে। আমরা সেই সব খাবার গায়ের জোরে কেড়ে খাই! নিজেদের ত আর বানাবার ক্ষমতা নেই! কি করে হবে! আমাদের গায়ে কি আর সবুজকণা আছে ? অগত্যা চুরি-চামারি করতে হয় আমাদের, মানে চোরাই মাল খেয়ে বেঁচে আছি আমরা! তাইত, নাকি ?

সূর্যের আলো যে খাবার তৈরীতে প্রয়োজন সেটা বোঝা যায় কোন বদ্ধ, অন্ধকার ঘরে বা ছায়ায় গাছ রাখলে। বদ্ধঘরের কোন জানালা খোলা থাকলে গাছ সেদিকে ঝুঁকে পড়ে আলোর খোঁজে, এটা কখনও খেয়াল করে দেখেছ ? একটা ফুলগাছের টব ঘরে রেখে দেখই না, কি হয় ! কয়েকদিন পর ওর চেহারা খারাপ হতে দেখলে রোদে রেখো কিন্তু, না হলে ও অসুস্থ হয়ে পড়বে ।

সন্তোষ কুমার রায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। বিষয় পদার্থবিজ্ঞান। শৈশব ও কৈশোর যথাক্রমে বাংলাদেশে এবং কলকাতায় কাটলেও, কর্মজীবন কেটেছে বাংলা বিহার সীমান্তের হিন্দুস্থান কেব্‌ল্‌স্‌ শিল্পনগরীতে। শিল্পনগরী থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকায় ছোটদের এবং বড়দের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা লিখেছেন বহুবছর। বর্তমানে ইচ্ছামতীর পরশমণি বিভাগে নিয়মিত লেখা ছাড়াও তিনি একটি গ্রুপ ব্লগের সদস্য রূপে লেখালিখি করেন ।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা