সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
আর্জেন্টিনা

'আর্জেন্টিনা ' নামটা শুনলে প্রথমেই লিওনেল মেসির কথা মনে আসে তো? তারপরে মারাদোনা, ওয়ার্ল্ড কাপ হোক বা কোপা আমেরিকা, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার ফুটবল যুদ্ধের আঁচ আমাদের গায়ে এসে লাগে খুব ভালোভাবেই। পাড়ায় পাড়ায় ঝুলতে থাকা নীল সাদা পতাকা আর স্বপ্নের ফুটবলশিল্পীদের নাম ছাড়া দেশটা সম্পর্কে আর কী কী জানি আমরা? এত্ত বড় একটা দেশ সম্পর্কে মাত্র একটা নিবন্ধে কি আর খুব বেশি জানা বা লেখা যায়? তবুও চেষ্টা করলাম আমরা, অনেক ছবি আর কিছু তথ্যের মাধ্যমে জেনে নিতে আর্জেন্টিনাকে।

আর্জেন্টিনা
বাঁদিকেঃ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে আর্জেন্টিনার অবস্থান
ডান দিকেঃ আর্জেন্টিনার ম্যাপ

পশ্চিমে চিলি, উত্তরে বলিভিয়া আর প্যারাগুয়ে, উত্তর-পূর্বে ব্রাজিল, পূর্বে উরুগুয়ে আর আটলান্টিক মহাসাগর, দক্ষিণে ড্রেক প্যাসেজ - এই হলো আর্জেন্টিনার সীমানা।
ম্যাপের ছবি :
আর্জেন্টিনা হলো বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ, এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ।
দেশের সরকারী ভাষা স্প্যানিশ। বৃহত্তম স্প্যানিশভাষী দেশ এটি।

আর্জেন্টিনা
প্রাচীন ইউরোপীয় ম্যাপে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূলের ছবি।
ইন্‌সেটঃ শিল্পীর কল্পনায় আদিম অধিবাসীদের আক্রমণে পরাস্ত স্পেনীয় অভিযাত্রীরা

'আর্জেন্টিনা'- নাম এল কোথা থেকে?
স্পেনীয় ঔপনিবেশিকেরা দক্ষিণ আমেরিকায় পা রাখার আগে, আজকে আমরা যে অঞ্চলটিকে আর্জেন্টিনা বলে চিনি, সেই বিস্তৃত অঞ্চলে, আদিপ্রস্তর যুগ ( Paleolithic Age) থেকেই বিভিন্ন আদিম জনজাতির মানুষ বসবাস করতেন। এঁরা বেশিরভাগই ছিলেন ভবঘুরে , কিংবা কেউ কেউ কৃষিকাজ , পশুপালনে অভ্যস্ত ছিলেন। স্পেনীয় অভিযাত্রী হুয়ান দিয়াজ দে সলিস ১৫১৬ দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথম যে অঞ্চলে পা রাখেন, সেটি ছিল উরুগুয়ে আর পারানা নদীর বিশাল মোহনা। কিন্তু এই অভিযানে সলিস এবং তাঁর বেশিরভাগ সহযাত্রী স্থানীয় জনজাতিদের আক্রমণে প্রাণ হারান। তাঁর অধীনে থাকা বাকি জাহাজগুলি ফিরে চলে যায়। তাদের মধ্যে একটি ব্রাজিলের কাছাকাছি সমুদ্রে ডুবে গেলে কিছু মানুষ সেখানে আটকা পড়েন। সেই সময়ে সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীরা তাঁদের রুপোর তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেয়। এই রূপো এবং কাল্পনিক রপোর পাহাড়ের গল্প ক্রমে ইউরোপে গিয়ে পৌঁছায়। স্প্যানিশ ভাষায় লোকমুখে সেই বিশাল নদীমুখের নাম হয়ে যায় রিও দে লা প্লাতা (রূপোর নদী)। আর ইতালীয়রা এই অঞ্চলের নাম রাখেন আর্জেন্টিনা , অর্থাৎ 'রূপোর দেশ' কারণ লাতিন ভাষায় রূপোর নাম আর্জেন্টাম। সময়ে সঙ্গে সঙ্গে 'আর্জেন্টিনা' নামটিই সবার মধ্যে প্রচলিত হয়।

আর্জেন্টিনা
ওপে বাঁদিকে থেকেঃ রেইনফরেস্ট অঞ্চল, চাকো, পাম্পাস
নিচে বাঁদিক থেকেঃ প্যাটাগোনিয়া, আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চল

ভৌগোলিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে আর্জেন্টিনাকে পাঁচভাগে ভাগ করা যায় :
উত্তরপূর্বাঞ্চলে ব্রাজিল ঘেঁষা রেইনফরেস্ট অঞ্চল, চাকো (Chaco) সমভূমি অঞ্চল, উর্বর পাম্পাস (Pampas) তৃণভূমি, প্যাটাগোনিয়া (Patagonia) মালভূমি অঞ্চল আর পশ্চিমে চিলির গা ঘেঁষে আন্দিজ (Andes) পর্বতমালা।

আর্জেন্টিনা
আকোঙ্কাগুয়া

এই আন্দিজ পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আকোঙ্কাগুয়া (Aconcagua) আর্জেন্টিনার মেন্ডোজা প্রদেশে অবস্থিত। এশিয়ার বাইরে যত পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে, এটির উচ্চতা তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ৬৯৬০ মিটার।

আর্জেন্টিনাপাম্পাস তৃণভূমি অঞ্চল

বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর সমভূমি অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আর্জেন্টিনার পাম্পাস তৃণভূমি অঞ্চল, যা এই দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস করেন এই অঞ্চলে।

আর্জেন্টিনা
ইগুয়াজু জলপ্রপাত

দেশ জুড়ে রয়েছে প্রায় আড়াইশো জলপ্রপাত, যাদের মধ্যে ইগুয়াজু (Iguazu) জলপ্রপাত সবথেকে বড়। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সীমানা সৃষ্টিকারী এই বিশাল জলপ্রপাতকে এই দুই দেশ থেকেই দেখতে পাওয়া যায়। ২.৭ কিলোমিটার বিস্তৃত, এবং ২৭৫টি ছোট-বড় প্রপাত মিলে তৈরি এই জলপ্রপাতটি নায়াগ্রার থেকে প্রায় দ্বিগুণ উঁচু এবং ভিক্টোরিয়া ফল্‌স্‌ এর থেকেও চওড়া।
১৯৮৪ সালে ইগুয়াজু ফলস্‌ ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের সম্মান লাভ করে আর ২০১১ সালে এটি নিউ সেভেন ওয়ান্ডার অফ নেচার- এর তালিকায় যুক্ত করা হয়।

ছবি দেখে ইগুয়াজুর বিশালত্ব বোঝা কঠিন, তাই রইল এই ভিডিও।

আর্জেন্টিনা
ওপরেঃ কলোরাডো নদী
নীচেঃ রিও দে লা প্লাতার কোল ঘেঁষে বুয়েনোস আইরেস নগর

প্রধান প্রধান নদী হলো কলোরাডো (Colorado), প্যারাগুয়ে (Paraguay), পারানা (Paraná), সালাদো(Salado), উরুগুয়ে (Uruguay) ইত্যাদি। উরুগুয়ে আর পারানা আটলান্টিকে মেশার আগে মিলিত হয়ে তৈরি করেছে বেসিন অফ দ্য রিও দে লা প্লাতা.

আর্জেন্টিনা
রাজধানী বুয়েনোর আইরেস

দেশের রাজধানী বুয়েনস আইরেস, সালাদো নদীর ধারে মহানগরটি অবস্থিত।

ভূতপূর্ব ইঞ্জিনিয়ার, বর্তমানে সাংসারিক কাজের মাঝে সু্যোগ পেলেই পড়া আর লেখার আনন্দে মাতার চেষ্টায় থাকেন। সেই গোত্রের মানুষ, যারা আর কিছু না পেলে ঠোঙ্গায় ছাপা খবরও মন দিয়ে পড়েন। সারাদিনের অনেকটা সময় কাটে মেয়ে কুটুনের সঙ্গে; তার কীর্তিকলাপ মাঝেমধ্যে লিখতে চেষ্টা করেন;বর্তমানে ধানবাদের বাসিন্দা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা