সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
শক্তিভুক

বীরু কলকাতার এক ছটফটে যুবক। কিছুদিন আগে সে কয়েকজন অভিজ্ঞ পর্বত অভিযাত্রীর দলে ভিড়ে হিমালয়ের অন্নপূর্ণা শৃঙ্গ অভিযানে গিয়েছিল। সমুদ্রতল থেকে হাজার পাঁচ মিটার উচ্চতায় সে যখন বেস ক্যাম্পের তাঁবু ফেলার জন্য ঝুরো বরফ খুঁড়ছে, শাবলের ডগায় শক্ত কী একটা ঠেকল। কৌতুহলী বীরু আর একটু খুঁড়ে দেখে, একটা বড়সড় গোলমতো পাথর। নাকি কোন অতিকায় ডিম – যা আগে কেউ কখনও দেখেনি? উৎসুক বীরু জিনিসটা তুলে ঝোলায় পুরল। কে জানে, এ যদি হারিয়ে যাওয়া অতীতের কোন চিহ্ন হয়? বীরু ঠিক করল, ফিরে গিয়ে বস্তুটি তার প্রাণীততত্ত্ববিদ বন্ধু অরণিকে দেখাতে হবে।

অভিযান সেরে তারা যখন নীচে নামতে শুরু করেছে, বীরু 'পাথরখণ্ড'-টার মধ্যে একটা আলোড়ন লক্ষ্য করল। কলকাতা পৌঁছোতে না পৌঁছোতেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে খোলা ফাটতে চলেছে। জরুরী তলব পেয়ে ছুটে এল অরণি। এসে দ্যাখে, খোলার ভেতর থেকে এক বদখদ ছানা কুচ্ছিৎ মুখ বের করে কুতকুতে চোখে ইতিউতি চাইছে।

"পাখি, সরীসৃপ আর স্তন্যপায়ীর মিলনে এ এক বিচিত্র প্রাণী! এমন কিছুর অস্তিত্ব অন্ততঃ বর্তমান পৃথিবীতে আছে বলে আমার জানা নেই।" হতভম্ব অরণি বলল।

বীরু উত্তেজতভাবে বলল,"তবে হয়তো এ এক প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী। হয়তো –"

"ডাইনোসর, বা দানব-পাখী টেরোডাকটিল?"তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে অরণি বলল,"না না, সেসব আমি চিনি। এ তাও নয়।" তারপর কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল,"খুব সম্ভবতঃ ইনি প্রকৃতির খেয়াল কোন 'মিউট্যান্ট' – বর্তমান না অতীতের তা অবশ্য এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।"

কলকাতা শহরতলীতে বেশ খানিকটা জায়গা নিয়ে অরণির বাড়ি। জীবজন্তুর ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে একটা ছোটখাটো প্রাণী সংগ্রহালয় বানিয়েছিল। এর জন্য অবশ্য তাকে বনদপ্তরের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল। বীরুর সঙ্গে কথা বলে অরণি এই বিচিত্র প্রাণীটিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে একটা ছোট্ট খাঁচায় পুরল। যে কোন অস্বাভাবিক জীবের রক্ষণাবেক্ষণের একমাত্র এক্তিয়ার বনদপ্তরের। কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে বৈজ্ঞানিক কৌতুহল মেটাবার পর প্রাণীটিকে তাদের হাতেই তুলে দেবে বলে অরণি ঠিক করল।

শিগগিরই দেখা গেল যে প্রাণীটির আলোর প্রতি ভীষণ টান। কখনও অন্ধকারে থাকতে হলে সে কর্কশ স্বরে এমন ডাক ছাড়ত যা শুনলে বুকের রক্ত হিম হয়ে যায়। অমন ছোট্ট ছানা যে অমন আওয়াজ করতে পারে, না শুনলে বিশ্বাস করা শক্ত। সূর্যের আলো তার খুব পছন্দ। তবে তাকে খাওয়ানোটা এক সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। সে মাংসাশী না নিরামিষাশী জানা না থাকায় সব রকম খাবারই তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। যে কোন খাবারই সে খুব আগ্রহের সঙ্গে নিয়ে অনেকটা ডিমে তা দেওয়া পাখীর ভঙ্গীতে কিছুক্ষণ তার ওপর বসে থাকে। তারপর নিরাসক্তভাবে সেটাকে পরিত্যাগ করে, ঠোঁটেও ছুঁইয়ে দেখে না। অরণির সন্দেহ হ’ল, মাকে কাছে পায়নি দেখে ছানাটা হয়ত খেতে শেখেনি।

অরণির পরিচারক মাধব জীবজন্তুগুলির দেখাশোনা করত। এই প্রাণীটিকে সে প্রথম থেকেই সন্দেহের চোখে দেখত, তাই খাবার একটা চিমটেয় ধরে খাঁচার ওপরের এক ফোকর দিয়ে খাঁচার মধ্যে গলিয়ে দিত। অভুক্ত খাদ্য আবার একই উপায়ে বের করে আনা হোত। কিছুদিন পর অরণি খুব চিন্তায় পড়ল – খাওয়ানোর একটা উপায় বের করতে না পারলে প্রাণীটি বাঁচবে কী করে? তারপর হঠাৎ একদিন অরণি এক তাক লাগানো ব্যাপার আবিস্কার করল। মাধব সবে না খাওয়া এক টুকরো মাংস খাঁচার থেকে বের করে এনেছে। দৈবাৎ সেটা ধরে অরণি দেখে, টুকরোটা বরফের মতো ঠাণ্ডা।

"ওকে ফ্রিজের মাংস দিয়েছিস কেন?"উত্তেজিত অরণি বলল,"এবার বুঝেছি ও কেন খেতে চায় না।"
"কোথায় – আমি তো গ্যাস থেকে নামিয়েই দিলাম।"মাধব চটপট সাফাই দিল।
"তোর চালাকি আমি বের করছি।"অরণি রেগেমেগে বলল,"ঠিক আছে, আর একটা টুকরো নিয়ে আয়।"

মাধব তক্ষুণি প্রভুর আজ্ঞা পালন ক’রে একখণ্ড গরমাগরম মাংস এনে খাঁচার মধ্যে ফেলে দিল। প্রাণীটি যথারীতি কিছুক্ষণ তার ওপর বসে থাকার পর তা পরিত্যাগ করল। মাধব মাংসখণ্ডটিকে বের করে আনার পর অরণি সেটা ছুঁয়ে দেখল, তা আবার বরফের মতো ঠাণ্ডা!

তাজ্জব কি বাত! অরণি প্রাণীটির শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখল, তা বরং স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি। সে কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে বসে রইল। শেষে অনেকক্ষণ চিন্তার পর নিজের মনে বিড় বিড় করে বলল, "শুনলে কেউ বিশ্বাস করবে – ব্যাটা পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় তাপশক্তি সরাসরি খাদ্যের থেকে শুষে নিচ্ছে!"

সুকুমার রায়ের ফ্যান অরণি এই শক্তিচোষা বিচিত্র ছানাটার নাম দিল 'কিম্ভুত' । সে লক্ষ করল, মুখে কুটোটিও না ছুঁইয়ে ছানাটি দিব্যি বেড়ে উঠছে, মূলতঃ পারিপার্শ্বিক থেকে তাপশক্তি শোষণ করে। বিশেষতঃ, মাংসজাতীয় কোন খাদ্যের থেকে তাপ আহরণ তার বিশেষ পছন্দ। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেলে প্রাণীটি জীবজগতের বিস্ময় বলে গণ্য হবে। দ্বিধাগ্রস্ত অরণি ওকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেবার ব্যাপারটা কিছুদিনের মতো মুলতুবি রাখার সিদ্ধান্ত নিল।

শিগগিরই সে বুঝতে পারল, কিম্ভুত তাপ ছাড়া অন্য ধরনের শক্তিও হজম করার ক্ষমতা রাখে। একদিন সে দেখল, কিম্ভুত বেশ খোশমেজাজে ঝিমোচ্ছে – যেন গাঁজাখোর গাঁজায় দম দিয়ে বসে মৌজ করছে। পরীক্ষা করার জন্য এগিয়ে গিয়ে খাঁচা ছুঁতেই সে রীতিমতো শক পেল – সত্যিকারের ২৪০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক! সর্বনাশ – খাঁচার গায়ে কীভাবে যেন বৈদ্যুতিক তারের ছোঁয়া লেগে গেছে! তক্ষুণি মেইন সুইচ অফ করে দিয়ে সে পরীক্ষা করতে শুরু করল আর অবিলম্বে অপরাধীকে আবিস্কার করলো – খাঁচার ফ্রেমের সাথে যত্ন করে প্যাঁচানো একটি বৈদ্যুতিক তার। অঘটন নয়, এ মানুষের কীর্তি!

সে সাথে সাথে মাধবকে ডেকে তার কলার চেপে ধরে বলল, "মুর্খ – জানিস তুই কী করতে যাচ্ছিলি? আমার বিশ্ববিখ্যাত হবার সুযোগ মাটি করে দিচ্ছিলি!"

"আমি আপনার ভালোই করতে চেয়েছিলাম।" অবিচল মাধব বলল, "ওটা শয়তান! ওকে শেষ করুন, নইলে ও-ই আপনাকে শেষ করবে।"

অরণি এতক্ষণে তার সাত রাজার ধন মানিকের দিকে তাকাবার অবসর পেল। সে অবাক হয়ে দেখল, কোন অসুবিধে বোধ করা দূরে থাক ছানাটা বেশ আরাম করে থাবা চাটছে – যেন একখান জম্পেশ ভোজ দিয়ে উঠল। হায় ভগবান – এ যে দেখছি বৈদ্যুতিক শক্তিও খেয়ে হজম করতে পারে! অরণির গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। তার আদরের ধন দৈবক্রমে রক্ষা পেয়ে যাওয়ায় খুশি হবে কিনা ঠিক বুঝতে পারল না।

কিম্ভুত দিনে দিনে বেড়ে উঠতে লাগল, বাড়তে লাগল মূলতঃ তার শক্তির খোরাকের ওপর ভর করে। সূর্য প্রতিদিন অপর্যাপ্ত শক্তি পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে দেয়। তার সামান্য অংশই আমরা নিজেদের কাজে লাগাতে পারি। গাছপালা সূর্যের আলোর থেকে সরাসরি খাবার বানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এই কিম্ভুত শক্তিচোষা শুধু সূর্যের তাপ আর আলোই নয়, মানুষের তৈরি বৈদ্যুতিক শক্তিও শুষে নিতে পারে। শুধু তাই নয়, চলমান বা কম্পমান বস্তুর গতিশক্তি শোষণের ক্ষমতাও সে রাখে বলে অরণি অবিলম্বে বুঝতে পারল।

বড় হবার সাথে সাথে ছানার রূপ খুলতে লাগল। কুৎসিৎ মাথা, রক্তবর্ণ চোখ, তীক্ষ্ণ নখ আর সরীসৃপের মতো থাবা – দেখলে মনে হবে যেন সদ্য শয়তানের কারখানার থেকে বেরিয়ে এল। অনেক চেষ্টাতেও অরণি বুঝতে পারল না সে পুরুষ না স্ত্রী। কিম্ভুত বড় ও শক্তিশালী হয়ে ওঠার ফলে তার খাঁচাও পাল্টাতে হল। অরণির ভয় হ’ত, ওকে সে হয়ত আর বেশিদিন সামলাতে পারবে না। তবু এই অত্যাশ্চর্য জীবটিকে সে প্রাণে ধরে বনদপ্তরের হাতে তুলে দিতে পারছিল না। তারপর একদিন মনে হ’ল – অনেক হয়েছে, আর নয়!

কিছুদিন ধরে অরণির সন্দেহ হচ্ছিল, তাপের উৎস হিসেবে জ্যান্ত প্রাণীর শরীর কিম্ভুতের বিশেষ পছন্দ। ওর খাঁচার আশেপাশে মাঝে মাঝে মরা ইঁদুর, টিকটিকির হিমশীতল দেহ পড়ে থাকতে দেখা যেত। অরণির ধারণা হয়েছিল, দৈবাৎ খাঁচায় ঢুকে পড়ে কিম্ভুতের আলিঙ্গনে শরীরের সমস্ত তাপ হারিয়েই তাদের পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হচ্ছে। কিন্তু একদিন চোখের সামনে এক মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটে যাবার পর সে বুঝতে পারল যে প্রাণীগুলো ঠিক 'দৈবাৎ' খাঁচায় ঢুকে পড়েনি।

জিম্বো ছিল অরণির পোষা হুলো বেড়াল। একদিন সে বিছানার পাশে শুয়ে ঝিমোচ্ছে, হঠাৎ তড়াক করে উঠে যেন কিসের পেছনে সাঁ করে বেরিয়ে গেল। পেছন পেছন গিয়ে অরণি দেখে, জিম্বো তার চিড়িয়াখানার দিকে চলেছে। সেখানে পৌঁছে সে সোজা কিম্ভুতের খাঁচার দিকে এগিয়ে গেল। অরণি শুনতে পেল, কিম্ভুত মাছির ভনভনানির মতো একটা গুনগুন আওয়াজ করছে আর বেচারা বেড়াল তার দুর্নিবার আকর্ষণে সেদিকে ধেয়ে চলেছে। অরণি বাধা দেবার আগেই সে খাঁচায় ঢুকে পড়ল। কিম্ভুত যেন তার অপেক্ষায় ছিল। তার উষ্ণ আলিঙ্গনে ধরা পড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেচারা বেড়ালের শীতল ও নিথর দেহ রুটিনমাফিক খাঁচার বাইরে নিক্ষিপ্ত হ’ল। অরণি অবিলম্বে কিম্ভুতের খাঁচায় তারজাল লাগাবার ব্যবস্থা করল। তবে প্রাণীটির তীক্ষ্ণ নখের সামনে সেসব টিঁকবে কি না সে সন্দেহ রয়েই গেল। সাথে সাথে সে অনেক ভেবেচিন্তে বনদপ্তরের জন্য একটা চিঠির খসড়া করল। তাতে সে কিম্ভুতের আশ্চর্য ক্ষমতার কথা লিখতে ভোলেনি, কিন্তু তার থেকে যে কোন বিপদ আসার সম্ভাবনা রয়েছে, সে বিষয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করল না। তার আশঙ্কা ছিল, তাহলে হয়ত বনদপ্তর কোন ঝুঁকি না নিয়ে প্রাণীটিকে খতম করে দেবে। চিঠিটা স্পীড পোস্টে পাঠিয়ে সে নিশ্চিন্ত হ’ল যে এবার কয়েকদিনের মধ্যেই সরকার যা যা করণীয় করে তাকে দায়মুক্ত করবে।

কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। সেদিন সন্ধের পর ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। খেয়েদেয়ে অরণি বিছানায় শুয়ে বই পড়ছে, বাইরে নিশুতি রাত। এমন সময় এক রক্ত জল করা আর্তনাদ শুনে সে লাফিয়ে উঠল। কোন চিন্তা না করেই সে কিম্ভুতের খাঁচার দিকে দৌড়োল। সেখানে মৃদু আলোয় দেখল, কিম্ভুত খাঁচার বাইরে মাধবের নিশ্চল দেহের ওপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে। দেখে বুঝতে অসুবিধে হ’ল না, মাধবের শরীরে প্রাণ নেই। আরেকটু দেখে সে আবিস্কার করল, তার মৃত পরিচারকের হাতের পাশে পড়ে আছে একটা ধারালো কাটারি। ব্যাপারটা স্পষ্ট হ’ল। প্রাণীটির প্রতি মাধবের আতঙ্ক বিকারের পর্যায়ে পৌঁছোনর ফলে সে কাটারিটা নিয়ে খাঁচায় ঢুকে তাকে খতম করতে এসেছিল। কিন্তু কিম্ভুতের দানবিক শক্তি সম্বন্ধে তার ধারণা ছিল না। এই অসমান যুদ্ধে তার জেতার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। লাভের মধ্যে, প্রাণীটি এখন খাঁচার থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে!

কিম্ভুত এবার তার লাল লাল চোখদুটি অরণির দিকে ঘোরাল। অরণি প্রাণের দায়ে পড়িমড়ি করে ছুটল, তার পেছন পেছন ধুপ ধুপ একটা পায়ের আওয়াজ। কী করবে বুঝতে না পেরে সে হাতের কাছে একটা শাবল পেয়ে ছুঁড়ে মারল, কিন্তু সভয়ে লক্ষ করল অস্ত্রটা ধীরে ধীরে গতি হারিয়ে থপ করে প্রাণীটির গায়ে গিয়ে আছড়ে পড়ল। কিম্ভুতের সহজাত ক্ষমতা শাবলটার গতিশক্তি শুষে নিয়েছে!

অরণির মনে পড়ল, তার একটা ছররা বন্দুক আছে। সে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সেটাতে ছররা ভরল। শাবলের আঘাতে প্রাণীটি হয়তো একটু দোটানায় পড়েছিল, কারণ তার পায়ের আওয়াজ আর শোনা যাচ্ছিল না। কিন্তু বেরিয়ে আসার পর অরণি দেখল, কিম্ভুত পায়ে পায়ে বাড়ির চৌহদ্দি ছাড়িয়ে রাস্তার দিকে চলেছে। ও বেরিয়ে পড়লে সর্বনাশ! অরণি দ্বিধা না করে বন্দুক চালাল। বোধহয় কানফাটা আওয়াজে ঘাবড়ে গিয়ে কিম্ভুত একটু থেমে পেছন ফিরে তাকাল। কয়েকটি ছররা নিশ্চিতই তার গায়ে লেগেছিল। কিন্তু অরণি স্পষ্ট বুঝতে পারল, প্রাণীটির গায়ে লাগার আগেই তাদের মারাত্মক বেগ যেন এক অলৌকিক উপায়ে কমে আসছে। কিম্ভুত তবে বুলেটের গতিশক্তিও শুষে নিতে পারে!

অরণির আশঙ্কা হ’ল, কিম্ভুত এবার তার দিকে ধেয়ে আসবে। কিন্তু ছররার চোট বোধহয় প্রাণীটিকে একটু ঘাবড়ে দিয়ে থাকবে – সে দৌড়ে, লাফিয়ে, শেষে উড়ুক্কু কাঠবেড়ালির মতো শূন্যে ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য বেগে দেখতে না দেখতে উধাও হয়ে গেল।

অরণি কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে রইল। তারপর হুঁশ ফিরে পেয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে একের পর এক ফোন করতে লাগল।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনীয়ার ও মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী অনিরুদ্ধ সেন কলকাতা-মুম্বইয়ের বিভিন্ন সাময়িকপত্র ও ওয়েব ম্যাগাজিনের নিয়মিত লেখক। তাঁর লেখা ও অনুবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, এবং সংকলিত বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা